কোটাবিরোধী ও সংস্কার আন্দোলনের জের ধরে নরসিংদী জেলা কারাগারে গত ১৯ জুলাই (শুক্রবার) হামলায় অগ্নিসংযোগ, আসামি পলাতক, অস্ত্র ও বুলেট লুট ঘটনায় দশ দিন পর তদন্ত শুরু হয়েছে। ২৮ জুলাই রোববার সকালে তদন্ত কমিটিতে দায়িত্বে থাকা সকল সদস্য এক সাথে নরসিংদী জেলা কারাগারটি পরিদর্শন করেন। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা কারাগারে ক্ষতিগ্রস্ত বাসভবন, আসামিদের সেল, ইউনিট ও কারা হাসপাতালসহ সমস্ত কারাগার ঘুরে দেখেন।
কারাগার ঘুরে এসে তদন্ত কমিটির আহবায়ক ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের যুগ্ন সচিব ড. ফারুক আহম্মদ সাংবাদিকদের জানান, সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে প্রত্যক্ষদর্শী বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সাথে কথা বলে ঘটনার বিস্তারিত জানা হচ্ছে।
এ ঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষের কোন অবহেলা ছিলো কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তদন্তে এটিও একটি বিষয়। কেননা এই তদন্ত দলের বেঁধে দেয়া কাজের মধ্যে কারাগারে হামলার কারণ ও কারো কোনো দায়িত্বে অবহেলা রয়েছে কিনা বিষয়গুলো উল্লেখযোগ্য।
এই তদন্ত দলকে ১০ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে তদন্ত কাজ পুরোদমে শুরু হয়েছে। আশা করা যায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রতিবেদন জমা দেয়া সম্ভব হবে। এরপরও বেধে দেয়া সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হলে হয়তো কিছু দিন সময় লাগতেও পারে।
তদন্ত কমিটির অন্যা সদস্যরা হলেন, নরসিংদী জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাত, ডিআইজি প্রিজন মো: সগির মিয়া, পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহমুদুল কবীর, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কে এম শহিদুল ইসলাম সোহাগ এবং সদস্য সচিব হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের উপ সচিব মোহাম্মদ আবু সাইদ মোল্লা।
কারাগারটি পরিদর্শন শেষে তদন্ত কমিটির সদস্যরা নরসিংদী জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে তদন্তের লক্ষে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে কথা বলেন।
উল্লেখ্য, কোটা বিরোধী ও সংস্কার ছাত্র আন্দোলনের জের ধরে দুর্বৃত্তরা গত ১৯ জুলাই নরসিংদীর কয়েকটি সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়। এর মধ্যে অন্যতম নরসিংদী জেলা কারাগারে হামলা চালিয়ে অগ্নি সংযোগ কালে ৯ জঙ্গিসহ ৮২৬ বন্দি আসামি পালিয়ে যায়। কারাগার থেকে লুট হয় ৮৫টি অস্ত্র ও প্রায় সাত হাজার রাউন্ড গুলি।
তবে বিভিন্ন সংস্থায় অভিযানে এরই মধ্যে ৪৫টি অস্ত্র ও এক হাজার ৯১ রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়েছে। ৮২৬ আসামীর মধ্যে এখন পর্যন্ত ৪৮১ জন আত্মসমর্পণ করেছেন বলে জানা যায় ।